ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়।

 আমরা সকলেই স্বপ্ন বাইরের দেশে ভ্রমন করা। আমরা যে দেশে যেতে চাই যদি আমরা সেই দেশ সঠিক তথ্য এবং সম্পূর্ণ প্রসেস না জানি তাহলে অনেক বিপদের সম্মুখীন হতে পারি।


আজ আমি আপনাদের শেয়ার করব ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়, দূরত্ব এবং খরচ সম্পর্কে কিছু তথ্য।

ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়।

ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার জন্য কয়েকটি প্রধান উপায় রয়েছে, তবে সবচেয়ে সাধারণ এবং দ্রুত উপায় হলো বিমানে যাত্রা। এখানে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

এয়ারলাইন্স (ফ্লাইট)


আপনি ফ্লাইটের মাধ্যমে ইতালি থেকে আমেরিকায় যেতে পারেন সেটা সবচেয়ে দ্রুত এবং সহজ মাধ্যম।আপনি ইতালি থেকে সরাসরি বা কানেক্টিং ফ্লাইট নিয়ে আমেরিকায় যেতে পারেন।

  • ইতালি থেকে প্রধান ফ্লাইট রুট

  • রোম, মিলান, ভেনিস থেকে নিউ ইয়র্ক, বোস্টন, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেস, মিয়ামি বা অন্যান্য বড় আমেরিকান শহরে সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে।

    • বিমান সংস্থা:

    ইউরোপিয়ান এয়ারলাইনস যেমন এয়ার ফ্রান্সকেএলএমলুফথানসাএমিরেটস এবং ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এদের মাধ্যমে আপনি কানেক্টিং ফ্লাইট নিয়ে আমেরিকা যেতে পারেন।

    • ট্রেন/বাসের মাধ্যমে:

     এটি অনেক সময় এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে সুবিধাজনক নয়, কারণ ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার জন্য আপনি কোন ট্রেন বা বাস ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে আপনি ট্রেনে ইউরোপের অন্য শহরে পৌঁছাতে পারেন এবং তারপর ফ্লাইট নিতে হবে।

    • সমুদ্রপথে পরিবহন

    যদিও সমুদ্র পথে ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু এটা বিপদজনক এবং অনেক সময় সাপেক্ষে।

    ইতালি থেকে আমেরিকায় ভ্রমণের ভিসা আবেদনের নিয়ম।

     ইতালি বা ইউরোপ থেকে আমেরিকায় ভ্রমণের জন্য আপনাকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিতে হবে। আমেরিকায় ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে সাধারণ ভিসা হল ট্যুরিস্ট ভিসা (B2), যা পর্যটন, বন্ধুবান্ধব অথবা চিকিৎসা সেবার জন্য দেওয়া হয়। এখানে আমেরিকা যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া ও নিয়মাবলী দেওয়া হলো:

    ভিসা প্রকার নির্বাচন:

    • B2 ভিসা (ট্যুরিস্ট ভিসা): সাধারণত, ট্যুরিজম বা চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হয়।
    • B1/B2 ভিসা: ব্যবসা ও ট্যুরিজমের জন্য কম্বাইন ভিসা।

    ২. আবেদন প্রক্রিয়া:

    1. অনলাইন আবেদন (DS-160 ফর্ম পূরণ):

      • প্রথমে, DS-160 নামক অনলাইন ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। এটি আমেরিকান ভিসা আবেদন সাইট থেকে পূর্ণ করতে হয়।
      • ফর্ম পূরণের সময় আপনাকে কিছু প্রাথমিক তথ্য যেমন নাম, ঠিকানা, পাসপোর্টের বিস্তারিত, আমেরিকায় ভ্রমণের উদ্দেশ্য ইত্যাদি দিতে হবে।
      • আবেদন পূরণের পর, একরকম কনফার্মেশন পৃষ্ঠা প্রিন্ট করে রাখতে হবে, যা পরবর্তী সময় আপনাকে দেখাতে হবে।
    2. ভিসা আবেদন ফি:

      • ভিসা আবেদন ফি সাধারণত ১৬৫ ইউএসডি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৫,০০০-১৭,০০০ টাকা) হয়। এটি অনলাইনে বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট এজেন্সির মাধ্যমে প্রদান করতে হয়। তবে ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী ফি পরিবর্তন হতে পারে।
    3. এম্বেসি বা কনস্যুলেটের সাথে সাক্ষাৎকার:

      • ফর্ম পূরণের পর, নিকটস্থ আমেরিকান দূতাবাস (এম্বেসি) বা কনস্যুলেট এ সাক্ষাৎকারের জন্য একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।
      • সাক্ষাৎকারে আপনার উদ্দেশ্য, ভ্রমণের সময়কাল, আর্থিক অবস্থা এবং অন্যান্য বিষয়াদি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হতে পারে।
      • সাক্ষাৎকারের জন্য পাসপোর্টDS-160 ফর্মের কনফার্মেশন পৃষ্ঠাভিসা ফি পেমেন্ট রিসিটএকটি পাসপোর্ট সাইজ ফটোগ্রাফ (বিশেষভাবে নির্দিষ্ট করা) প্রয়োজন।
    4. নথিপত্রের প্রস্তুতি:

      • পাসপোর্ট: আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ আবেদন থেকে কমপক্ষে ৬ মাসের বেশি থাকতে হবে।
      • ফটোগ্রাফ: নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজের ছবি দিতে হবে (২x২ ইঞ্চি, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে)।
      • বিভিন্ন নথি:
        • ফ্লাইট বুকিং এবং হোটেল রিজার্ভেশন: আমেরিকায় কোথায় থাকবেন এবং কীভাবে যাবেন তা সম্পর্কিত তথ্য।
        • আর্থিক প্রমাণ: আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আয়কর রিটার্ন, চাকরির তথ্য ইত্যাদি যা আপনার অর্থনৈতিক স্থিতি প্রমাণ করবে।
        • পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের সাথে সম্পর্কের প্রমাণ (যদি থাকে)।
    5. ভিসা সাক্ষাৎকার:

      • সাক্ষাৎকারে, কনস্যুলেট বা দূতাবাসের কর্মকর্তা আপনার আবেদন এবং নথিগুলি পরীক্ষা করবেন। তারা আপনার ভিসা অনুমোদন বা অস্বীকার করার সিদ্ধান্ত নেবেন।
      • সাক্ষাৎকারের সময় আপনাকে আমেরিকা যাওয়ার উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে এবং সৎভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।

    ৩. ভিসা অনুমোদন/অস্বীকৃতি:

    • যদি আপনার ভিসা অনুমোদিত হয়, তবে আপনার পাসপোর্টে আমেরিকান ভিসা সিলম্প করা হবে।
    • ভিসার অনুমোদনের পর, আপনাকে ভিসা পাসপোর্ট পেতে কিছু দিন সময় লাগতে পারে (অন্তত ৩-৫ কার্যদিবস)।
    • ভিসা অস্বীকৃত হওয়ার কারণও থাকতে পারে, যেমন আপনার আবেদনকারীর নথি অসম্পূর্ণ, ভ্রমণের উদ্দেশ্য স্পষ্ট নয়, কিংবা আর্থিক অবস্থান নিশ্চিত নয়।

    ৪. ভিসা আবেদনের সময়সীমা:

    • সাধারণভাবে, আমেরিকান ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া ২-৩ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নিতে পারে, তবে উল্লিখিত প্রক্রিয়াগুলোর জন্য একটু বেশি সময় নাও লাগতে পারে, তাই আগেই আবেদন করা ভালো।

    ইতালি থেকে আমেরিকার দূরত্ব।

    অনেকে জানিনা এটার থেকে আমেরিকা যাওয়ার দ্রুত কত কিলোমিটার এ পোস্টের মাধ্যমে আমরা ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার দূরত্ব সম্পর্কে জানবো। অনেক জায়গায় দ্রুত অনেক রকমের লেখা আছে তবে গুগল ম্যাপ হতে জানা যায়। ইতালি থেকে আমেরিকার যাওয়ার দূরত্ব ৭২০০ কিলোমিটার। প্রায় ৪ হাজার ৫০০ মাইল।

    ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ।

    এখানে থেকে আমেরিকার যাওয়ার খরচ দুই রকমের ধরা যেতে পারে। প্রথম ফ্লাইট এর খরচ এবং অন্যান্য তাহলে চলুন জেনে নিয়ে ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত।

    ফ্লাইট এর খরচ- ফ্লাইটের খরচ অনেক পরিবর্তনশীল, তবে সাধারণভাবে এটি ৫০০ থেকে ১,৫০০ ইউরো (বাংলাদেশি টাকায় ৫৫,০০০ থেকে ১,৬৫,০০০ টাকার মধ্যে) হতে পারে।

    ভিসা খরচ: যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য, আপনি B2 (টুরিস্ট) ভিসা আবেদন করতে হতে পারে। এর জন্য খরচ ১৬৫ ইউএসডি (প্রায় ১৫,০০০-১৭,০০০ টাকা) হতে পারে।

    বিমানের অতিরিক্ত খরচ: ব্যাগেজ, খাবার বা অন্যান্য সুবিধা এর সাথে যুক্ত থাকতে পারে।

    উপসংহার

    আজকে এ আর্টিকেলটির মাধ্যমে মিতালী থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়। ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার ভিসা প্রসেস কিভাবে করবেন, ইতালি থেকে আমেরিকা যাওয়ার দূরত্ব এবং খরচ সম্পর্কের বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন।

    Next Post Previous Post
    No Comment
    Add Comment
    comment url